সূরা আন নাযেয়াত
মক্কায় অবতীর্ণ- আয়াত ৪৬, রুকু ২
রহমান রহীম আল্লাহ তায়ালার নামে-
১. শপথ (সেই ফেরেশতাদের), যারা নির্মমভাবে (পাপীদের আত্মা) ছিনিয়ে আনে,
২. শপথ (সেই ফেরেশতাদের) যারা সহজভাবে (নেককারদের রূহ) খুলে দেয়,
৩. শপথ (সেই ফেরেশতাদের), যারা (আমার হুকুম তামিল করার জন্যে) সাঁতরে বেড়ায়,
৪. শপথ (সেই ফেরেশতাদের), যারা (হুকুম পালনে) দ্রুত এগিয়ে চলে,
৫. শপথ (সেই ফেরেশতাদের), যারা (সব ক’টি) কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে।
৬. (কেয়ামত অবশ্যই আসবে), সেদিন ভূকম্পনের এক প্রচন্ড ঝাঁকুনি হবে,
৭. (কবর থেকে সবাইকে ওঠানোর জন্যে) সাথে সাথে আরেকটি ধাক্কা হবে;
৮. (এ অবস্থা দেখে) সেদিন মানুষের অন্তরসমূহ ভয়ে কম্পমান হবে,
৯. তাদের সবার দৃষ্টি হবে সেদিন নিম্নগামী (ও ভীত-সন্ত্রস্ত)।
১০. কাফেররা বলে, সত্যিই কি আমাদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া হবে?
১১. আমরা পচে-গলে হাড্ডিতে পরিণত হয়ে যাওয়ার পরও?
১২. তারা (এও) বলেছে, যদি আমাদের আগের জীবনে ফিরিয়ে নেয়া হয়, তাহলে সেটা তো হবে খুবই লোকসানের বিষয়।
১৩. অবশ্যই তা হবে বড়ো ধরনের একটি গর্জন;
১৪. (এ গর্জন শেষ না হতেই দেখা যাবে,) তারা (কবর থেকে উঠে যমীনের ওপর) সমবেত হয়ে গেছে;
১৫. (হে নবী,) তোমার কাছে কি মূসার কাহিনী পৌঁছেছে?
১৬. তাকে যখন তার মালিক পবিত্র ‘তুয়া’ উপত্যকায় ডেকে বলেছিলেন,
১৭. যাও ফেরাউনের কাছে, কারণ সে (তার মালিকের) বিদ্রোহ করেছে,
১৮. তাকে জিজ্ঞেস করো, তুমি কি (ঈমান এনে) পবিত্র হতে চাও?
১৯. (তাকে এও বলো,) আমি তোমাকে তোমার মালিকের (কাছে পৌঁছার একটা) পথ দেখাতে পারি, এতে তুমি হয়তো তাঁকে ভয় করবে,
২০. অতপর সে তাকে (আমার পক্ষ থেকে) নবুওতের বড়ো একটি নিদর্শন দেখালো,
২১. কিন্তু সে (আমার নবীকে) মিথ্যা সাব্যস্ত করলো এবং সে (তার) বিরুদ্ধাচরণ করলো,
২২. অতপর (ষড়যন্ত্র করার মানসে) সে পেছনে ফিরে গেলো,
২৩. সে লোকজন জড়ো করলো এবং তাদের ডাক দিলো,
২৪. তারপর বললো, আমিই হচ্ছি তোমাদের সবচেয়ে বড়ো ‘রব’,
২৫. অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তাকে আখেরাত ও দুনিয়ার আযাবে পাকড়াও করলেন;
২৬. অবশ্যই এমন সব লোকের জন্যে এতে শিক্ষার নিদর্শন রয়েছে যারা (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করে,
২৭. (তোমরা বলো,) তোমাদের (দ্বিতীয় বার) সৃষ্টি করা কি বেশী কঠিন, না আকাশ সৃষ্টি করা বেশী কঠিন? আল্লাহ তায়ালা তা বানিয়েছেন।
২৮. আল্লাহ তায়ালা (শূন্যের মাঝে) তা উঁচু করে রেখেছেন, অতপর তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন,
২৯. তিনি রাতকে (অন্ধকারের চাদর দিয়ে) ঢেকে রেখেছেন, আবার তা থেকে (আলো দিয়ে) দিনকে বের করে এনেছেন,
৩০. এরপর যমীনকে তিনি (বিছানার মতো করে) বিছিয়ে দিয়েছেন;
৩১. তা থেকে তিনি তার পানি ও তার উদ্ভিদরাজি বের করেছেন,
৩২. তিনি পাহাড়সমূহ (যমীনের গায়ে পেরেকের মতো) গেড়ে দিয়েছেন,
৩৩. তোমাদের জন্যে এবং তোমাদের জন্তু জানোয়ারদের উপকারের জন্যে;
৩৪. তারপর যখন বড়ো বিপর্যয় (তোমাদের সামনে) হাযির হবে,
৩৫. সেদিন মানুষ একে একে সব কিছুই স্মরণ করবে যা (সে দুনিয়ায়) করে এসেছে,
৩৬. সেদিন সে ব্যক্তি দেখতে পাবে, যার জন্যে জাহান্নাম খুলে ধরা হবে।
৩৭. অতপর যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে,
৩৮. এবং (পরকালের তুলনায়) দুনিয়ার জীবনকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে,
৩৯. অবশ্যই এই জাহান্নাম হবে তার (একমাত্র) আবাসস্থল;
৪০. (আবার) যে ব্যক্তি তার মালিকের সামনে দাঁড়ানো (-র এ দিন)-কে ভয় করেছে এবং (এ ভয়ে) নিজের নফসকে কামনা বাসনা থেকে বিরত রেখেছে,
৪১. অবশ্যই জান্নাত হবে তার ঠিকানা;
৪২. তারা তোমার কাছে জানতে চায় কেয়ামত কখন সংঘটিত হবে?
৪৩. (তুমি তাদের বলে দাও,) সে সময়ের কথা বর্ণনা করার সাথে তোমার কি সম্পর্ক (তা তুমি জানবে কি করে)?
৪৪. তার (আগমনের) চূড়ান্ত (জ্ঞান একমাত্র) তোমার মালিকের কাছেই রয়েছে;
৪৫. তুমি হচ্ছো সে ব্যক্তির জন্যে সাবধানকারী, যে একে ভয় করে ;
৪৬. যেদিন এরা কেয়ামত দেখতে পাবে, সেদিন (এদের মনে হবে) তারা এক বিকাল অথবা এক সকাল পরিমাণ সময় (দুনিয়ায়) অতিবাহিত করে এসেছে ।
Leave a Reply